পাহাড় ও সমুদ্রের আত্মাকথা

পাহাড় ও সমুদ্রের আত্মাকথা


আমি দাঁড়িয়ে থাকি পাহাড়ের চূড়ায়,

নিরবতার গভীরে শোনার চেষ্টা করি—

পাথরের বুকের গভীরে কীসের কান্না?

কোনও এক আদিম সময় থেকে সে জেগে আছে,

গভীর ধ্যানমগ্ন যোগীর মতো,

নিঃসঙ্গ অথচ দৃঢ়,

ঝড়-জল-রোদের খেলা সহ্য করে চলেছে নিরবধি।

সমুদ্র আমায় ডাকে নীচে,

তার ঢেউয়ের ভাষা বোঝার চেষ্টা করি,

কখনও তা হাসি, কখনও তা রুদ্রতা,

কখনও প্রেমের গোপন আলিঙ্গন।

সে পাহাড়ের দিকে চেয়ে বলে—

"তুমি কেন এত নীরব?

আমি তো ক্লান্তিহীন, উচ্ছ্বসিত, উন্মত্ত,

আমি আসি, ছুটে যাই, হারিয়ে যাই—

কিন্তু কখনও থামি না!"

পাহাড় হেসে ওঠে ধীর সুরে,

"তোমার বুকে আছে অস্থিরতা,

আর আমার বুকে আছে ধৈর্য।

তুমি ছুটতে পারো, আমি দাঁড়িয়ে দেখি।

তুমি বদলে যাও প্রতি মুহূর্তে,

আমি বদলাই সহস্র বছরে।

আমরা আলাদা, অথচ এক,

প্রকৃতির দুই বিপরীত স্পন্দন।"

আমি চুপ করে থাকি,

এই দুই মহাশক্তির সংলাপ শুনতে শুনতে,

নিজেকেও কখনও পাহাড়, কখনও সমুদ্র মনে হয়।

আমিও তো জীবনকে কখনও নীরবে বহন করি,

আবার কখনও ঢেউয়ের মতো ভেঙে পড়ি—

আবার জেগে উঠি নতুন করে।

কলমে : ধার্মিক

Comments

Popular posts from this blog

পলাশ ফুলের আগুন তোমার জন্য

হেমন্ত আসেনি

তুমি আমার এক অন্যরকম প্রেমের উপন্যাস