অপেক্ষার চেয়ার
অপেক্ষার চেয়ার
সবুজ অরণ্যের গভীরে, যেখানে আলো আর ছায়ার খেলা চলে নিরবধি,
সেখানে একা দাঁড়িয়ে আছে একটি চেয়ার।
কাঠের গায়ে সময়ের দাগ, বয়সের চিহ্ন।
ঝরে পড়া পাতারা এসে আশ্রয় নেয় তার বুকে, যেন তারা জানে—এই চেয়ার অপেক্ষা করতে জানে।
সামনে বয়ে চলেছে নদী। শান্ত, গভীর, শব্দহীন।
তার স্বচ্ছ জলে চেয়ারের প্রতিচ্ছবি কাঁপে হালকা হাওয়ায়।
জলের ঢেউয়ে ছড়িয়ে যায় নীরবতার সুর।
- যেন সে-ও বোঝে এই চেয়ারের প্রতীক্ষা।
এই চেয়ার কি কারো জন্য অপেক্ষা করছে?
নাকি বসে থাকা স্মৃতির ভার তার কাঁধে?
হয়তো একদিন কেউ এখানে এসে বসেছিল।
হয়তো একটা গল্প শুরু হয়েছিল,- কিন্তু শেষ হয়নি।
হয়তো কেউ ফিরে আসবে, অথবা আসবে না।
গভীর অরণ্যের ভিতর বাতাস ফিসফিস করে কিছু বলে,
নদীর ঢেউ এসে আলতো ছুঁয়ে যায় চেয়ারের পা।
সময় থমকে দাঁড়ায় এক মুহূর্তের জন্য, তারপর আবার বয়ে যায়।
অপেক্ষা ফুরোয় না, শুধু রং বদলায়।
একদিন সবুজ পাতারা হলুদ হয়ে ঝরে যাবে, নদীর জল অন্য গল্প বহন করবে, হয়তো এই চেয়ারও
ভেঙে পড়বে সময়ের ভারে। তবুও, তার অপেক্ষা শেষ হবে কি?
অরণ্যের নীরবতা জানে উত্তর। নদীর জল জানে।
কিন্তু চেয়ার—সে শুধু দাঁড়িয়ে থাকে, একা, নিঃসঙ্গ, এক অন্তহীন অপেক্ষায়।
কলমে : ধার্মিক
Comments
Post a Comment