Posts

।। তুমি কি আমার হবে?।।

 ।। তুমি কি আমার হবে?।। তুমি কি আমার একাকিত্বের সঙ্গী হবে? যখন রাত গভীর হবে, নক্ষত্ররা নিঃশব্দে আমার জানালার পাশে বসে থাকবে, তখন তুমি কি আমার পাশে থাকবে? নিঃশব্দে, মৃদু হাসিতে, আমার একাকিত্বের মধ্যে আলো হয়ে? তুমি কি আমার জ্যোৎস্না রাতের গল্প হবে? সেই নরম, সাদা আলোয় যখন পৃথিবী আবছা হয়ে আসে, তখন তুমি কি আমার হৃদয়ের গভীর অনুভূতিগুলো শুনবে? আমার স্বপ্নগুলো কি তোমার কাছে নিরাপদ আশ্রয় পাবে? তুমি কি আমার প্রিয় হবে? যার নাম উচ্চারণ করলেই আমার ভেতরটা কেঁপে উঠবে এক মিষ্টি কম্পনে? যার চোখের এক চিলতে ভালোবাসাই আমার সমস্ত ক্লান্তি মুছে দেবে? ভালোবাসায় জড়িয়ে নেবে? ঠিক সেইভাবে, যেভাবে সন্ধ্যার আকাশ ভালোবেসে সূর্যকে লাল রঙে মুড়ে দেয়? আমি তোমার উষ্ণতার মধ্যে হারিয়ে যাব, তুমি কি আমাকে অনুভব করতে পারবে? তুমি কি আমার ব্যক্তিগত মানুষ হবে? যে আমাকে বোঝে, আমার খুনসুটি, অভিমান, আনন্দ—সবটুকুকে আপন করে নেয়? যার কাছে আমি একান্তই আমার মতো থাকতে পারি, যে আমাকে বদলাতে চায় না, বরং আমাকে আরও গভীরভাবে ভালোবাসতে শেখায়? তোমার সব অধিকার আমায় দেবে? তোমার হাত, তোমার হৃদয়, তোমার সমস্ত অনুভূতির একমাত্র দাবিদার কি আমাকেই ...

মুখস্থবিদ্যার চোরাবালি

Image
 মুখস্থবিদ্যার চোরাবালি মুখস্থ করে পাস করাই তো চৌর্যবৃত্তি! একজন লুকিয়ে আনে বই, আরেকজন লুকিয়ে আনে শব্দ, একজন ধরা পড়ে, আরেকজন প্রশংসিত হয়। কিন্তু সত্যিকার শেখা কোথায়? কোথায় চিন্তার আলো? শুধু গিললেই কি জ্ঞানী হওয়া যায়? শুধু মনে রাখলেই কি বোঝা হয়ে যায়? বইয়ের পাতাগুলো মুখস্থ করে যে এগিয়ে চলে, সে কি জানে, সে আসলে এগোচ্ছে না— বরং পিছু হটছে এক অন্ধ গলিপথে! শিক্ষা কি শুধু কিছু শব্দের শৃঙ্খল? নাকি সে মুক্তির গান, উন্মুক্ত আকাশের ডানা? যে শেখে বোঝার জন্য, সে-ই তো সত্যিকারের শিক্ষার্থী, যে মুখস্থ করে কেবল নম্বরের লোভে, সে তো কেবল এক দক্ষ চোর! দেখো নদীকে— সে মুখস্থ করে না পথ, সে নিজের ছন্দে গড়ে নেয় গন্তব্য। দেখো বাতাসকে— সে মুখস্থ করে না দিক, সে অনুভব করে চলার আনন্দ। তবে কেন শেখা হবে রুদ্ধ, কেন শেখা হবে মুখস্থের শেকলে বাঁধা? শেখো বোঝার জন্য, শেখো নতুন পথ গড়ার জন্য। মুখস্থ বিদ্যা একদিন হারিয়ে যাবে, কিন্তু যা সত্যি বুঝেছো, তা থাকবে চিরদিন, তোমার আলো হয়ে, তোমার দিকনির্দেশ হয়ে। কলমে : ধার্মিক

কৃষ্ণচূড়া নেই

Image
  কৃষ্ণচূড়া নেই বসন্ত এসেছে, ধুলোবালি মেখে রঙিন হয়ে উঠেছে পৃথিবী।  আমার উঠোনে কোকিলের ডাক, আম্রকুঞ্জের মিষ্টি গন্ধ, বাতাসে উড়ে আসা কৃষ্ণচূড়ার কল্পনা। তবু,  আমার আঙিনায় কৃষ্ণচূড়া নেই। তুমি কি জানো, কৃষ্ণচূড়ার অভাব কতটা ব্যথার? বসন্তের আকাশ যখন আগুন রঙে রাঙে, তখন আমার  বুকের ভেতর শূন্যতা বাজে।  যেন তুমি আছো, তোমার হাসি আছো, অথচ তোমার হাত নেই আমার হাতে। কোকিলের গানে যে তৃষ্ণা জাগে, সে তৃষ্ণা মেটে না, যদি কৃষ্ণচূড়া না ফোটে। প্রেমের মতোই তো, শুধু  শব্দে, শুধু গন্ধে কি সম্পর্ক পূর্ণ হয়? ছোঁয়া লাগে, চোখের চাহনি লাগে, লাগে একসঙ্গে বসে থাকা  কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায়। তুমি কি আসবে একদিন? আমার উঠোনে, যেখানে বসন্ত এসে দাঁড়িয়েছে একা? তুমি কি আমার জন্য  একগাছি কৃষ্ণচূড়া এনে দেবে? বলবে, “নাও, এ তোমার বসন্তের রং।” আমি সেই লালে আমার ভালোবাসা  রাঙিয়ে দেবো। তখন হয়তো বসন্ত সম্পূর্ণ হবে। কোকিল ডাকবে, বাতাসে উড়বে কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি, আর আমি তোমার  হাত ধরে বলব— এখন আমার বসন্ত পূর্ণ, এখন আমার কৃষ্ণচূড়া ফুটেছে। কলমে : ধার্মিক

শব্দহীন সংলাপ

শব্দহীন সংলাপ ভেবেছিলাম তোমাকে নিয়ে উপন্যাস লিখবো— পাতায় পাতায় সাজিয়ে তুলবো আমাদের সমস্ত সংলাপ, তোমার বলা-না-বলা কথা, আমার শোনা-না-শোনা প্রতিধ্বনি। কিন্তু তুমি এলেও, একটা দীর্ঘ নীরবতা রেখে গেলে বুকের ভেতর। শব্দরা এলোমেলো হয়ে ছড়িয়ে পড়লো বাতাসে, কলমের ডগায় জমে রইলো অপেক্ষা, আর আমি রইলাম শব্দহীন— ঠিক যেমন করে তুমি চলে গেলে তোমার চোখের গভীরতা ছুঁয়ে দেখার আগেই তুমি উধাও হলে নিস্তব্ধতার দূর সমুদ্রে। আমার সমস্ত উপমা, অলংকার, রূপক— তোমার পায়ের ধুলোয় লুটিয়ে পড়লো। বাক্য তৈরি হওয়ার আগেই তুমি টেনে নিলে তার শ্বাস। আমি এখনও খুঁজি— তোমার রেখে যাওয়া একটুখানি প্রতিধ্বনি, একটা অসমাপ্ত প্রশ্ন, একটা ভাঙা বাক্য, যা দিয়ে নতুন করে শুরু করা যায়। কিন্তু তোমার নীরবতা এতটাই গভীর, যেখানে শব্দেরা হারিয়ে যায়, সেখানে ভাষা বোবা হয়ে পড়ে। ভেবেছিলাম তোমাকে নিয়ে উপন্যাস লিখবো, কিন্তু আজ বুঝি, তুমি আমাকে দিয়ে কাব্য লিখিয়ে নিলে। শব্দহীন এক সংলাপ, যার প্রতিটি স্তবক নীরবতার চেয়েও ভারী। কলমে : ধার্মিক

শব্দের বিষ

Image
শব্দের বিষ এই সংসারে মানুষই একমাত্র প্রাণী, যার বিষ লুকিয়ে থাকে শুধু দাঁতে নয়, তার শব্দেও, তার কণ্ঠেও, তার ভাষাতেও। সাপের বিষ শরীরে ঢোকে, মানুষের বিষ প্রবেশ করে মনের গভীরে, ধীরে ধীরে গিলে খায় সমস্ত বিশ্বাস, সমস্ত ভালোবাসা, সমস্ত শান্তি। একটা মাত্র তির্যক বাক্য ভেঙে দিতে পারে একটা জীবন, একটা অবজ্ঞার শব্দ নির্বাক করে দিতে পারে সমস্ত স্বপ্ন। তুমি কি কখনো দেখেছো? শিশুর কচি মনে যখন কেউ রুক্ষ কথা বলে, সে কীভাবে নিভৃতে গুমড়ে কাঁদে? তুমি কি অনুভব করেছো? ভালোবাসার নামে বলা এক ফোঁটা তিরস্কার কীভাবে ঠেলে দেয় সম্পর্ককে অন্ধকারে? মানুষ ভাবে, শব্দ হাওয়ায় মিলিয়ে যায়, কিন্তু শব্দ তো থেকে যায় হৃদয়ের গহীনে, একটা কটূক্তি, একটা উপহাস, একটা অনাদরের শব্দ— শিকড় গেঁথে বসে রক্তে, নিঃশব্দে ঢেলে দেয় বিষ। তবু মানুষ শব্দ ছুঁড়ে মারে, বলে, "এ তো শুধু কথা!" কিন্তু সেই কথাই ছিন্নভিন্ন করে দেয় মন, নিঃশেষ করে দেয় আত্মার সমস্ত আলো। হায়! যদি মানুষ জানতো, তার শব্দের বিষই সবচেয়ে নির্মম, সবচেয়ে তীক্ষ্ণ, সবচেয়ে অমোঘ— তবে কি সে এত সহজে ছুঁড়ে মারতো তার জিহ্বার ধারালো অস্ত্র? কলমে : ধার্মিক

ভালো লাগা ভালবাসা

Image
ভালো লাগা  ভালবাসা  ভালো লাগা ভালবাসা কোনো অন্যায় নয়। এই পৃথিবীর প্রতিটি মুহূর্তে, প্রতিটি শ্বাসে কেউ না কেউ কাউকে ভালোবাসে, কারও চোখে আলো জ্বলে, কারও মনে নরম পরশ লেগে থাকে অচেনা এক আকর্ষণের। ভালো লাগা আসে বাতাসের মতো— অদৃশ্য, অথচ অনুভবযোগ্য। যেমন বিকেলের ছায়া পড়ে মুখের ওপর, তেমনই কারও উপস্থিতি হৃদয়ের আকাশ রাঙিয়ে দেয়। একটি মুখোশ, যা হাসির আড়ালে লুকিয়ে রাখে উপহাস। কারও অনুভূতির সাথে ছলনা করা, তার আশার ডালে কাঁচি চালানো, এ কি পাপ নয়? মনের দরজায় কড়া নেড়েছে ভালো লাগা, কিন্তু সে দরজা খুলতে হবে সততার হাতে। ভালো না লাগলে বলো— "আমি পারবো না," "আমার পথ আলাদা," আমার পছন্দ অন্য কোথাও "তোমার জন্য শ্রদ্ধা রইলো, কিন্তু ভালোবাসা নয়।" তাই ভালো লাগুক, ভালোবাসাও জন্ম নিক, কিন্তু সত্যের আলোয়— ভুল বোঝাবুঝির অন্ধকারে নয়। কলমে : ধার্মিক

আকাশ ও গোধূলি

Image
আকাশ ও গোধূলি তুমি বরং আকাশ হও, বিস্তৃত, অবিনশ্বর।  যেখানে মেঘেরা মুক্তির আনন্দে উড়ে বেড়াবে, আলো-আঁধারির খেলা করবে।  রৌদ্রস্নাত দুপুরে নীল রঙের গভীরতায় ডুব দেবে, আবার কখনো গর্জন করে ঝরাবে বৃষ্টিধারা।  তুমি হবে অসীম, যেখানে দিগন্ত হারিয়ে যায়, যেখানে পাখিরা ফিরে আসে দিনের শেষে। আর আমি? আমি হবো গোধূলি।  সূর্য যখন ক্লান্ত হয়ে অস্ত যাচ্ছে, তার শেষ আভায় রাঙিয়ে দেব পৃথিবী।  হালকা কমলা, লাল আর বেগুনির ছায়ায় আমি রঙিন হয়ে উঠবো—মৃদু, কোমল, কিছুটা বিষাদে মাখা। তোমার নীলের মধ্যে আমি মিলিয়ে যাবো, যেমন সন্ধ্যার আলো মিশে যায় রাতের গহ্বরে। তুমি থেকে যাবে দিনভর, আর আমি আসবো কিছু মুহূর্তের জন্য, নিছক সন্ধেবেলা।   তবু, আমাদের ছোঁয়া লাগবে একে অপরের গায়ে, হঠাৎ, অন্যমনস্কভাবে।   হয়তো মেঘের শরীর ছুঁয়ে সূর্যের শেষ আলো তোমাকে জানিয়ে দেবে আমার উপস্থিতি।  হয়তো একদিন গোধূলিও আকাশের অংশ হয়ে উঠবে। কলমে : ধার্মিক